Friday, June 19, 2015

Cricket

ZS


ভারতের চাপে মুস্তাফিজকে জরিমানা করলো ম্যাচ রেফারি
অনলাইন ডেস্ক, ২০ জুন:
প্রকাশ : ২০ জুন, ২০১৫
http://www.jugantor.com/assets/images/news_images/2015/06/20/thumbnails/image_281835.jpg
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে জরিমানা করা হয়েছে। তার ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ কেটে নেয়া হয়। আর ধোনিসহ টিম ইন্ডিয়ার চাপে বাংলাদেশের তরুণ পেসার মুস্তাফিজকে জরিমানা করেন ম্যাচ রেফারি পাইক্রফট। এমনই খবর প্রকাশ করেছে কলকাতার বিখ্যাত দৈনিক আনন্দবাজার। বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে শুনানিতে ধোনিদের চাপেই মুস্তাফিজের ম্যাচ ফির অর্ধেক কেটে নেয়া হয়
<a href='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f' target='_blank'><img src='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=780&amp;n=acd94d5f' border='0' alt='' /></a>
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‌মাত্র তিনটে মাস। মধ্যবর্তী তিনটে মাসে দুই প্রতিবেশী দেশের প্রাপ্তির মানচিত্রে কম উপাদান সংযোজন হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফর করেছেন। ক্রিকেটবিশ্বে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের জমানা অস্তাচলে গিয়েছে। বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসেছেন জগমোহন ডালমিয়া। বিশ্বকাপ-উত্তর দুদেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কে উন্নতি ঘটেছে প্রভূত। শ্রীনির রক্তচক্ষু সত্ত্বেও বাংলাদেশের জুনিয়র টিম ভারতের বোর্ড প্রেসিডেন্টের শহরে ঘুরে গিয়েছে। আর যতই এক টেস্ট তিন ওয়ান ডে- সংক্ষিপ্ত সফর হোক না কেন, বাংলাদেশ সফরে সিনিয়র টিমই শেষ পর্যন্ত পাঠিয়েছে ভারত
কিন্তু তিন মাসের বৃত্ত সম্পূর্ণ হতেই সব আবার পাল্টে গেল। মেলবোর্ন কোয়ার্টার ফাইনালের পূঞ্জীভূত ক্ষোভের মেঘ ঢেকে ফেলল মীরপুর আকাশকে। কাঁধের এক ধাক্কায় মহেন্দ্র সিংহ ধোনি পারে সম্মানের সোনার সিংহাসন হারালেন। বাংলাদেশ বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলে গেলেন, ধোনি যা করেছেন সেটা এড়িয়ে গেলেই পারতেন। ভারত অধিনায়ক রাতে ঠিক করে ঘুমোতে পারলেন না। ম্যাচ হারের ময়নাতদন্ত করে উঠতে পারলেন না। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে দিন দুপুর পর্যন্ত তাকে দৌড়ে বেড়াতে হল ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ঘরে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে
যা সম্পূর্ণ প্রমাণ করতে পারলেন না ভারত অধিনায়ক। বাংলাদেশ পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের যদি পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা হয়ে থাকে, ধোনির হল পঁচাত্তর শতাংশ। ম্যাচ রেফারির সামনে ঘটনার সময় নিজের গতিবিধি, বোলারের মুভমেন্ট, রায়নার পজিশন সব পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা করেও পূর্ণ কলঙ্কমোচন সম্ভব হল না। এমএসডির ভাবমূর্তির পূর্ণগ্রাস আটকানো গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু একটা কথাও ঘুরেফিরে রমজানের পদ্মাপারে ভেসে বেড়াল
এমএসডিও তা হলে মেজাজ হারান! ক্যাপ্টেন কুলের বরফশীতল মস্তিষ্কেও তা হলে আগুন ধরে!
নাটকের সূত্রপাত, বৃহস্পতিবার রাত দুটোয়। মীরপুর স্টেডিয়াম ছেড়ে ততক্ষণে অভুক্ত অবস্থায় হোটেল ফিরে গিয়েছে টিম। আচমকাই রাত দুটো নাগাদ ধোনিকে ডেকে পাঠান ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট। ভারত অধিনায়ক উপস্থিত হলে তাকে বলে দেয়া হয়, আম্পায়াররা তোমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট জমা করেছেন। মুস্তাফিজুরকে তুমি ধাক্কা মেরেছ ম্যাচে। যা লেভেল টু অপরাধ। এবং তিনটে রাস্তা ফেলে দেয়া হয় ধোনির সামনে
) দোষ স্বীকার করে নেয়া। যা হলে ম্যাচ ফি- পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা
) দোষ স্বীকার করে শাস্তি কমানোর আবেদন করা
) অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করা। কিন্তু সেক্ষেত্রে দুম্যাচের নির্বাসন বা একশো শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেওয়ার যে কোনও একটা হবে

যা শুনে নাকি উত্তেজিত হয়ে পড়েন ধোনি। ঘনিষ্ঠদের কাছে বলতে থাকেন, তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে মোটেও এটা করেননি। দুভাবে ব্যাপারটা এড়ানো যেত। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে পড়তে পারতেন। কিন্তু তাতে রান আউট হতে হত। আর নইলে মুস্তাফিজুরকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য দিক দিয়ে দৌড়তে পারতেন। সেটা হলে নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে থাকা রায়নার সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারত। ধোনি নাকি আরও বলেন যে তাঁর কাঁধ, কনুইয়ের পজিশন দেখলেই বোঝা যাবে এটা ইচ্ছাকৃত নয়। তাই অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি লড়বেন। কারণ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করছেন এই মর্মে ফর্মে সই করে ম্যাচ রেফারির কাছে পাঠিয়েও দেয়া হয়
যার পর দুটো ঘটনা নাকি সমান্তরাল ভাবে চলতে থাকে। ম্যাচ রেফারি এবং আম্পায়াররা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ নিয়ে রাতেই বসে পড়েন। বারবার চালিয়ে দেখা হয় ভারতীয় ইনিংসের পঁচিশ নম্বর ওভার। যেখানে মুস্তাফিজুরকে সজোরে ধাক্কা মেরে রান নিতে যাচ্ছেন ধোনি। ভারতীয় শিবিরে আবার বৈঠকের পর বৈঠক চলতে থাকে। সকাল পৌনে টা নাগাদ ব্রেকফাস্ট টেবলে বসে পড়েন চার জন। অধিনায়ক ধোনি। টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। সহ অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এবং টিমের প্রশাসনিক ম্যানেজার বিশ্বরূপ দে
শোনা গেল, ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবচেয়ে উত্তেজিত চরিত্রের নাম ছিল বিরাট কোহলি। যিনি নাকি বলতে থাকেন, দোষ যে করল সে শাস্তি পাচ্ছে না। যে করেনি, সে পাচ্ছে। ম্যাচ রেফারির ঘরে শুনানির জন্য ঢোকার আগে পরবর্তী প্ল্যান অব অ্যাকশনও ঠিক করে ফেলা হয়। পাইক্রফটের সামনে ঘটনার অ্যাকশন রিপ্লে ধোনি করে দেখাবেন। নিজের। বোলারের। রায়নার। শাস্ত্রী তুলবেন বোলারের পজিশনের ব্যাপারটা। আর টিম ম্যানেজার আইনি প্যাঁচে ফেলবেন পাইক্রফটকে

ছক বাঁধা পথে যা এর পর চলতে থাকে। ধোনি ঘটনার সময় নিজের কাঁধ, কনুই, মাথার পজিশন সব কিছুর পুনরাবৃত্তি করে বোঝাতে থাকেন কেন এটা ইচ্ছাকৃত নয়। শাস্ত্রী বলেন যে, বোলার কেন ডেঞ্জার জোনে ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে? ফলো থ্রু অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বলও তাঁর ধারেকাছে ছিল না। টিম ম্যানেজার বিশ্বরূপ যুক্তি দেন, কোনও গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে দুভাবে দেখা যেতে পারে। চালকের দোষে সেটা ঘটেছে। নইলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই গাড়ির সামনে চলে এসেছে। সব সময় তাই চালকের দোষেই হবে, এমন নয়
প্রতিবেদনে বলা হয়, নানাবিধ যুক্তিতর্কের পর ম্যাচ রেফারি সুর নরম করে নাকি বলেন যে, ধোনি এটা ইচ্ছে করে করেননি বোঝা গেল। কিন্তু আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টেই আছে যে, ম্যাচ চলাকালীন ধাক্কাধাক্কি হলে জরিমানা অবধারিত। ধোনির তাই ম্যাচ ফি- পঁচাত্তর শতাংশ কেটে নেওয়া হবে। শাস্ত্রীরা তখন বলেন যে, ধোনি দোষী হলে মুস্তাফিজুরও সম্পূর্ণ নির্দোষ নন। ভারত ঠিক করে ফেলে বাংলাদেশকে যদি না ডাকা হয়, তা হলে আইসিসির কাছে রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হবে। কিন্তু যুদ্ধে মহানাটকীয় মোড় এনে ম্যাচ রেফারি বার ডেকে পাঠান মুস্তাফিজুরকে। যাঁর আম্পায়ার্স রিপোর্টে নামই ছিল না! কিন্তু ভারতের শুনানির পরে মুস্তাফিজুরকে ডেকে তারও পঞ্চাশ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেয়া হয়
বাংলাদেশ যে সেটা খুব ভাল ভাবে নেয়নি বলাই বাহুল্য। শুনানি চুকেবুকে যাওয়ার পরে টিম হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলাদেশ বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলে দেন, এটা মাঠের ব্যাপার। তবে যা হল সেটা আমাদের পছন্দ নয়। আবহ যার পর আরও গুমোট হয়ে গেল। ভারততারাও গত রাতে ড্রেসিংরুমে শাস্ত্রীর মৃদু শাসনের বাইরে ময়নাতদন্ত নিয়ে এগোতে পারল না। অধিনায়কের সম্মান বাঁচাতেই গোটা দিন বেরিয়ে গেল। কিন্তু পুরো বাঁচল তো? বাংলাদেশ মিডিয়া বলল বাংলাদেশের জয়, মাশরফি মর্তুজার প্রকাশ্যে ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া, মুস্তাফিজুরের দোষ স্বীকারএই তিনটে ফ্যাক্টর কাজ না করলে আরও বিপন্ন হতে পারত ধোনির ভাবমূর্তি। বলল, ধোনিকে আগে যুধিষ্ঠিরের সম্মানে দেখা হত। বৃহস্পতিবারের রাত থেকে যা আর সম্ভব নয়
এমএসডি নাকি প্রমাণ করে দিয়েছেন, তিনিও রক্তমাংসের মানুষ। তার সম্মান-রথের চাকাও প্রয়োজনে মাটি ছোঁয়!
http://www.jugantor.com/template/jugantor/images/printer_icon.png 0  0  0  0
- See more at: http://www.jugantor.com/international/2015/06/20/281835#sthash.79MNIutz.dpuf

 

ভারতের চাপে মুস্তাফিজকে জরিমানা করলো ম্যাচ রেফারি
অনলাইন ডেস্ক, ২০ জুন:
প্রকাশ : ২০ জুন, ২০১৫
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে জরিমানা করা হয়েছে। তার ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ কেটে নেয়া হয়। আর ধোনিসহ টিম ইন্ডিয়ার চাপে বাংলাদেশের তরুণ পেসার মুস্তাফিজকে জরিমানা করেন ম্যাচ রেফারি পাইক্রফট। এমনই খবর প্রকাশ করেছে কলকাতার বিখ্যাত দৈনিক আনন্দবাজার। বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে শুনানিতে ধোনিদের চাপেই মুস্তাফিজের ম্যাচ ফির অর্ধেক কেটে নেয়া হয়।
&lt;a href='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f' target='_blank'&gt;&lt;img src='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=780&amp;amp;n=acd94d5f' border='0' alt='' /&gt;&lt;/a&gt;
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‌মাত্র তিনটে মাস। মধ্যবর্তী তিনটে মাসে দুই প্রতিবেশী দেশের প্রাপ্তির মানচিত্রে কম উপাদান সংযোজন হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফর করেছেন। ক্রিকেটবিশ্বে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের জমানা অস্তাচলে গিয়েছে। বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসেছেন জগমোহন ডালমিয়া। বিশ্বকাপ-উত্তর দু’দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কে উন্নতি ঘটেছে প্রভূত। শ্রীনির রক্তচক্ষু সত্ত্বেও বাংলাদেশের জুনিয়র টিম ভারতের বোর্ড প্রেসিডেন্টের শহরে ঘুরে গিয়েছে। আর যতই এক টেস্ট ও তিন ওয়ান ডে-র সংক্ষিপ্ত সফর হোক না কেন, বাংলাদেশ সফরে সিনিয়র টিমই শেষ পর্যন্ত পাঠিয়েছে ভারত।কিন্তু তিন মাসের বৃত্ত সম্পূর্ণ হতেই সব আবার পাল্টে গেল। মেলবোর্ন কোয়ার্টার ফাইনালের পূঞ্জীভূত ক্ষোভের মেঘ ঢেকে ফেলল মীরপুর আকাশকে। কাঁধের এক ধাক্কায় মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এ পারে সম্মানের সোনার সিংহাসন হারালেন। বাংলাদেশ বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলে গেলেন, ধোনি যা করেছেন সেটা এড়িয়ে গেলেই পারতেন। ভারত অধিনায়ক রাতে ঠিক করে ঘুমোতে পারলেন না। ম্যাচ হারের ময়নাতদন্ত করে উঠতে পারলেন না। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে এ দিন দুপুর পর্যন্ত তাকে দৌড়ে বেড়াতে হল ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ঘরে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে।যা সম্পূর্ণ প্রমাণ করতে পারলেন না ভারত অধিনায়ক। বাংলাদেশ পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের যদি পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা হয়ে থাকে, ধোনির হল পঁচাত্তর শতাংশ। ম্যাচ রেফারির সামনে ঘটনার সময় নিজের গতিবিধি, বোলারের মুভমেন্ট, রায়নার পজিশন সব পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা করেও পূর্ণ কলঙ্কমোচন সম্ভব হল না। এমএসডির ভাবমূর্তির পূর্ণগ্রাস আটকানো গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু একটা কথাও ঘুরেফিরে রমজানের পদ্মাপারে ভেসে বেড়াল।এমএসডিও তা হলে মেজাজ হারান! ক্যাপ্টেন কুলের বরফশীতল মস্তিষ্কেও তা হলে আগুন ধরে!নাটকের সূত্রপাত, বৃহস্পতিবার রাত দু’টোয়। মীরপুর স্টেডিয়াম ছেড়ে ততক্ষণে অভুক্ত অবস্থায় হোটেল ফিরে গিয়েছে টিম। আচমকাই রাত দু’টো নাগাদ ধোনিকে ডেকে পাঠান ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট। ভারত অধিনায়ক উপস্থিত হলে তাকে বলে দেয়া হয়, আম্পায়াররা তোমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট জমা করেছেন। মুস্তাফিজুরকে তুমি ধাক্কা মেরেছ ম্যাচে। যা লেভেল টু অপরাধ। এবং তিনটে রাস্তা ফেলে দেয়া হয় ধোনির সামনে।১) দোষ স্বীকার করে নেয়া। যা হলে ম্যাচ ফি-র পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা।২) দোষ স্বীকার করে শাস্তি কমানোর আবেদন করা।৩) অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করা। কিন্তু সেক্ষেত্রে দু’ম্যাচের নির্বাসন বা একশো শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেওয়ার যে কোনও একটা হবে। যা শুনে নাকি উত্তেজিত হয়ে পড়েন ধোনি। ঘনিষ্ঠদের কাছে বলতে থাকেন, তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে মোটেও এটা করেননি। দু’ভাবে ব্যাপারটা এড়ানো যেত। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে পড়তে পারতেন। কিন্তু তাতে রান আউট হতে হত। আর নইলে মুস্তাফিজুরকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য দিক দিয়ে দৌড়তে পারতেন। সেটা হলে নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে থাকা রায়নার সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারত। ধোনি নাকি আরও বলেন যে তাঁর কাঁধ, কনুইয়ের পজিশন দেখলেই বোঝা যাবে এটা ইচ্ছাকৃত নয়। তাই অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি লড়বেন। কারণ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করছেন এই মর্মে ফর্মে সই করে ম্যাচ রেফারির কাছে পাঠিয়েও দেয়া হয়।যার পর দু’টো ঘটনা নাকি সমান্তরাল ভাবে চলতে থাকে। ম্যাচ রেফারি এবং আম্পায়াররা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ নিয়ে রাতেই বসে পড়েন। বারবার চালিয়ে দেখা হয় ভারতীয় ইনিংসের পঁচিশ নম্বর ওভার। যেখানে মুস্তাফিজুরকে সজোরে ধাক্কা মেরে রান নিতে যাচ্ছেন ধোনি। ভারতীয় শিবিরে আবার বৈঠকের পর বৈঠক চলতে থাকে। সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ ব্রেকফাস্ট টেবলে বসে পড়েন চার জন। অধিনায়ক ধোনি। টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। সহ অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এবং টিমের প্রশাসনিক ম্যানেজার বিশ্বরূপ দে।শোনা গেল, ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবচেয়ে উত্তেজিত চরিত্রের নাম ছিল বিরাট কোহলি। যিনি নাকি বলতে থাকেন, দোষ যে করল সে শাস্তি পাচ্ছে না। যে করেনি, সে পাচ্ছে। ম্যাচ রেফারির ঘরে শুনানির জন্য ঢোকার আগে পরবর্তী প্ল্যান অব অ্যাকশনও ঠিক করে ফেলা হয়। পাইক্রফটের সামনে ঘটনার অ্যাকশন রিপ্লে ধোনি করে দেখাবেন। নিজের। বোলারের। রায়নার। শাস্ত্রী তুলবেন বোলারের পজিশনের ব্যাপারটা। আর টিম ম্যানেজার আইনি প্যাঁচে ফেলবেন পাইক্রফটকে। ছক বাঁধা পথে যা এর পর চলতে থাকে। ধোনি ঘটনার সময় নিজের কাঁধ, কনুই, মাথার পজিশন সব কিছুর পুনরাবৃত্তি করে বোঝাতে থাকেন কেন এটা ইচ্ছাকৃত নয়। শাস্ত্রী বলেন যে, বোলার কেন ডেঞ্জার জোনে ও ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে? ফলো থ্রু অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বলও তাঁর ধারেকাছে ছিল না। টিম ম্যানেজার বিশ্বরূপ যুক্তি দেন, কোনও গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে দু’ভাবে দেখা যেতে পারে। চালকের দোষে সেটা ঘটেছে। নইলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই গাড়ির সামনে চলে এসেছে। সব সময় তাই চালকের দোষেই হবে, এমন নয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, নানাবিধ যুক্তিতর্কের পর ম্যাচ রেফারি সুর নরম করে নাকি বলেন যে, ধোনি এটা ইচ্ছে করে করেননি বোঝা গেল। কিন্তু আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টেই আছে যে, ম্যাচ চলাকালীন ধাক্কাধাক্কি হলে জরিমানা অবধারিত। ধোনির তাই ম্যাচ ফি-র পঁচাত্তর শতাংশ কেটে নেওয়া হবে। শাস্ত্রীরা তখন বলেন যে, ধোনি দোষী হলে মুস্তাফিজুরও সম্পূর্ণ নির্দোষ নন। ভারত ঠিক করে ফেলে বাংলাদেশকে যদি না ডাকা হয়, তা হলে আইসিসির কাছে রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হবে। কিন্তু যুদ্ধে মহানাটকীয় মোড় এনে ম্যাচ রেফারি এ বার ডেকে পাঠান মুস্তাফিজুরকে। যাঁর আম্পায়ার্স রিপোর্টে নামই ছিল না! কিন্তু ভারতের শুনানির পরে মুস্তাফিজুরকে ডেকে তারও পঞ্চাশ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেয়া হয়।বাংলাদেশ যে সেটা খুব ভাল ভাবে নেয়নি বলাই বাহুল্য। শুনানি চুকেবুকে যাওয়ার পরে টিম হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলাদেশ বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলে দেন, এটা মাঠের ব্যাপার। তবে যা হল সেটা আমাদের পছন্দ নয়। আবহ যার পর আরও গুমোট হয়ে গেল। ভারত— তারাও গত রাতে ড্রেসিংরুমে শাস্ত্রীর মৃদু শাসনের বাইরে ময়নাতদন্ত নিয়ে এগোতে পারল না। অধিনায়কের সম্মান বাঁচাতেই গোটা দিন বেরিয়ে গেল। কিন্তু পুরো বাঁচল তো? বাংলাদেশ মিডিয়া বলল বাংলাদেশের জয়, মাশরফি মর্তুজার প্রকাশ্যে ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া, মুস্তাফিজুরের দোষ স্বীকার— এই তিনটে ফ্যাক্টর কাজ না করলে আরও বিপন্ন হতে পারত ধোনির ভাবমূর্তি। বলল, ধোনিকে আগে যুধিষ্ঠিরের সম্মানে দেখা হত। বৃহস্পতিবারের রাত থেকে যা আর সম্ভব নয়।এমএসডি নাকি প্রমাণ করে দিয়েছেন, তিনিও রক্তমাংসের মানুষ। তার সম্মান-রথের চাকাও প্রয়োজনে মাটি ছোঁয়!
 0  0  0  0
- See more at: http://www.jugantor.com/international/2015/06/20/281835#sthash.79MNIutz.dpuf
ভারতের চাপে মুস্তাফিজকে জরিমানা করলো ম্যাচ রেফারি
অনলাইন ডেস্ক, ২০ জুন:
প্রকাশ : ২০ জুন, ২০১৫
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে জরিমানা করা হয়েছে। তার ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ কেটে নেয়া হয়। আর ধোনিসহ টিম ইন্ডিয়ার চাপে বাংলাদেশের তরুণ পেসার মুস্তাফিজকে জরিমানা করেন ম্যাচ রেফারি পাইক্রফট। এমনই খবর প্রকাশ করেছে কলকাতার বিখ্যাত দৈনিক আনন্দবাজার। বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে শুনানিতে ধোনিদের চাপেই মুস্তাফিজের ম্যাচ ফির অর্ধেক কেটে নেয়া হয়।
&lt;a href='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f' target='_blank'&gt;&lt;img src='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=780&amp;amp;n=acd94d5f' border='0' alt='' /&gt;&lt;/a&gt;
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‌মাত্র তিনটে মাস। মধ্যবর্তী তিনটে মাসে দুই প্রতিবেশী দেশের প্রাপ্তির মানচিত্রে কম উপাদান সংযোজন হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফর করেছেন। ক্রিকেটবিশ্বে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের জমানা অস্তাচলে গিয়েছে। বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসেছেন জগমোহন ডালমিয়া। বিশ্বকাপ-উত্তর দু’দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কে উন্নতি ঘটেছে প্রভূত। শ্রীনির রক্তচক্ষু সত্ত্বেও বাংলাদেশের জুনিয়র টিম ভারতের বোর্ড প্রেসিডেন্টের শহরে ঘুরে গিয়েছে। আর যতই এক টেস্ট ও তিন ওয়ান ডে-র সংক্ষিপ্ত সফর হোক না কেন, বাংলাদেশ সফরে সিনিয়র টিমই শেষ পর্যন্ত পাঠিয়েছে ভারত।কিন্তু তিন মাসের বৃত্ত সম্পূর্ণ হতেই সব আবার পাল্টে গেল। মেলবোর্ন কোয়ার্টার ফাইনালের পূঞ্জীভূত ক্ষোভের মেঘ ঢেকে ফেলল মীরপুর আকাশকে। কাঁধের এক ধাক্কায় মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এ পারে সম্মানের সোনার সিংহাসন হারালেন। বাংলাদেশ বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলে গেলেন, ধোনি যা করেছেন সেটা এড়িয়ে গেলেই পারতেন। ভারত অধিনায়ক রাতে ঠিক করে ঘুমোতে পারলেন না। ম্যাচ হারের ময়নাতদন্ত করে উঠতে পারলেন না। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে এ দিন দুপুর পর্যন্ত তাকে দৌড়ে বেড়াতে হল ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ঘরে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে।যা সম্পূর্ণ প্রমাণ করতে পারলেন না ভারত অধিনায়ক। বাংলাদেশ পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের যদি পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা হয়ে থাকে, ধোনির হল পঁচাত্তর শতাংশ। ম্যাচ রেফারির সামনে ঘটনার সময় নিজের গতিবিধি, বোলারের মুভমেন্ট, রায়নার পজিশন সব পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা করেও পূর্ণ কলঙ্কমোচন সম্ভব হল না। এমএসডির ভাবমূর্তির পূর্ণগ্রাস আটকানো গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু একটা কথাও ঘুরেফিরে রমজানের পদ্মাপারে ভেসে বেড়াল।এমএসডিও তা হলে মেজাজ হারান! ক্যাপ্টেন কুলের বরফশীতল মস্তিষ্কেও তা হলে আগুন ধরে!নাটকের সূত্রপাত, বৃহস্পতিবার রাত দু’টোয়। মীরপুর স্টেডিয়াম ছেড়ে ততক্ষণে অভুক্ত অবস্থায় হোটেল ফিরে গিয়েছে টিম। আচমকাই রাত দু’টো নাগাদ ধোনিকে ডেকে পাঠান ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট। ভারত অধিনায়ক উপস্থিত হলে তাকে বলে দেয়া হয়, আম্পায়াররা তোমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট জমা করেছেন। মুস্তাফিজুরকে তুমি ধাক্কা মেরেছ ম্যাচে। যা লেভেল টু অপরাধ। এবং তিনটে রাস্তা ফেলে দেয়া হয় ধোনির সামনে।১) দোষ স্বীকার করে নেয়া। যা হলে ম্যাচ ফি-র পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা।২) দোষ স্বীকার করে শাস্তি কমানোর আবেদন করা।৩) অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করা। কিন্তু সেক্ষেত্রে দু’ম্যাচের নির্বাসন বা একশো শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেওয়ার যে কোনও একটা হবে। যা শুনে নাকি উত্তেজিত হয়ে পড়েন ধোনি। ঘনিষ্ঠদের কাছে বলতে থাকেন, তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে মোটেও এটা করেননি। দু’ভাবে ব্যাপারটা এড়ানো যেত। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে পড়তে পারতেন। কিন্তু তাতে রান আউট হতে হত। আর নইলে মুস্তাফিজুরকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য দিক দিয়ে দৌড়তে পারতেন। সেটা হলে নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে থাকা রায়নার সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারত। ধোনি নাকি আরও বলেন যে তাঁর কাঁধ, কনুইয়ের পজিশন দেখলেই বোঝা যাবে এটা ইচ্ছাকৃত নয়। তাই অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি লড়বেন। কারণ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করছেন এই মর্মে ফর্মে সই করে ম্যাচ রেফারির কাছে পাঠিয়েও দেয়া হয়।যার পর দু’টো ঘটনা নাকি সমান্তরাল ভাবে চলতে থাকে। ম্যাচ রেফারি এবং আম্পায়াররা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ নিয়ে রাতেই বসে পড়েন। বারবার চালিয়ে দেখা হয় ভারতীয় ইনিংসের পঁচিশ নম্বর ওভার। যেখানে মুস্তাফিজুরকে সজোরে ধাক্কা মেরে রান নিতে যাচ্ছেন ধোনি। ভারতীয় শিবিরে আবার বৈঠকের পর বৈঠক চলতে থাকে। সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ ব্রেকফাস্ট টেবলে বসে পড়েন চার জন। অধিনায়ক ধোনি। টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। সহ অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এবং টিমের প্রশাসনিক ম্যানেজার বিশ্বরূপ দে।শোনা গেল, ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবচেয়ে উত্তেজিত চরিত্রের নাম ছিল বিরাট কোহলি। যিনি নাকি বলতে থাকেন, দোষ যে করল সে শাস্তি পাচ্ছে না। যে করেনি, সে পাচ্ছে। ম্যাচ রেফারির ঘরে শুনানির জন্য ঢোকার আগে পরবর্তী প্ল্যান অব অ্যাকশনও ঠিক করে ফেলা হয়। পাইক্রফটের সামনে ঘটনার অ্যাকশন রিপ্লে ধোনি করে দেখাবেন। নিজের। বোলারের। রায়নার। শাস্ত্রী তুলবেন বোলারের পজিশনের ব্যাপারটা। আর টিম ম্যানেজার আইনি প্যাঁচে ফেলবেন পাইক্রফটকে। ছক বাঁধা পথে যা এর পর চলতে থাকে। ধোনি ঘটনার সময় নিজের কাঁধ, কনুই, মাথার পজিশন সব কিছুর পুনরাবৃত্তি করে বোঝাতে থাকেন কেন এটা ইচ্ছাকৃত নয়। শাস্ত্রী বলেন যে, বোলার কেন ডেঞ্জার জোনে ও ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে? ফলো থ্রু অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বলও তাঁর ধারেকাছে ছিল না। টিম ম্যানেজার বিশ্বরূপ যুক্তি দেন, কোনও গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে দু’ভাবে দেখা যেতে পারে। চালকের দোষে সেটা ঘটেছে। নইলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই গাড়ির সামনে চলে এসেছে। সব সময় তাই চালকের দোষেই হবে, এমন নয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, নানাবিধ যুক্তিতর্কের পর ম্যাচ রেফারি সুর নরম করে নাকি বলেন যে, ধোনি এটা ইচ্ছে করে করেননি বোঝা গেল। কিন্তু আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টেই আছে যে, ম্যাচ চলাকালীন ধাক্কাধাক্কি হলে জরিমানা অবধারিত। ধোনির তাই ম্যাচ ফি-র পঁচাত্তর শতাংশ কেটে নেওয়া হবে। শাস্ত্রীরা তখন বলেন যে, ধোনি দোষী হলে মুস্তাফিজুরও সম্পূর্ণ নির্দোষ নন। ভারত ঠিক করে ফেলে বাংলাদেশকে যদি না ডাকা হয়, তা হলে আইসিসির কাছে রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হবে। কিন্তু যুদ্ধে মহানাটকীয় মোড় এনে ম্যাচ রেফারি এ বার ডেকে পাঠান মুস্তাফিজুরকে। যাঁর আম্পায়ার্স রিপোর্টে নামই ছিল না! কিন্তু ভারতের শুনানির পরে মুস্তাফিজুরকে ডেকে তারও পঞ্চাশ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেয়া হয়।বাংলাদেশ যে সেটা খুব ভাল ভাবে নেয়নি বলাই বাহুল্য। শুনানি চুকেবুকে যাওয়ার পরে টিম হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলাদেশ বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলে দেন, এটা মাঠের ব্যাপার। তবে যা হল সেটা আমাদের পছন্দ নয়। আবহ যার পর আরও গুমোট হয়ে গেল। ভারত— তারাও গত রাতে ড্রেসিংরুমে শাস্ত্রীর মৃদু শাসনের বাইরে ময়নাতদন্ত নিয়ে এগোতে পারল না। অধিনায়কের সম্মান বাঁচাতেই গোটা দিন বেরিয়ে গেল। কিন্তু পুরো বাঁচল তো? বাংলাদেশ মিডিয়া বলল বাংলাদেশের জয়, মাশরফি মর্তুজার প্রকাশ্যে ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া, মুস্তাফিজুরের দোষ স্বীকার— এই তিনটে ফ্যাক্টর কাজ না করলে আরও বিপন্ন হতে পারত ধোনির ভাবমূর্তি। বলল, ধোনিকে আগে যুধিষ্ঠিরের সম্মানে দেখা হত। বৃহস্পতিবারের রাত থেকে যা আর সম্ভব নয়।এমএসডি নাকি প্রমাণ করে দিয়েছেন, তিনিও রক্তমাংসের মানুষ। তার সম্মান-রথের চাকাও প্রয়োজনে মাটি ছোঁয়!
 0  0  0  0
- See more at: http://www.jugantor.com/international/2015/06/20/281835#sthash.79MNIutz.dpuf
ভারতের চাপে মুস্তাফিজকে জরিমানা করলো ম্যাচ রেফারি
অনলাইন ডেস্ক, ২০ জুন:
প্রকাশ : ২০ জুন, ২০১৫
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে জরিমানা করা হয়েছে। তার ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ কেটে নেয়া হয়। আর ধোনিসহ টিম ইন্ডিয়ার চাপে বাংলাদেশের তরুণ পেসার মুস্তাফিজকে জরিমানা করেন ম্যাচ রেফারি পাইক্রফট। এমনই খবর প্রকাশ করেছে কলকাতার বিখ্যাত দৈনিক আনন্দবাজার। বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে শুনানিতে ধোনিদের চাপেই মুস্তাফিজের ম্যাচ ফির অর্ধেক কেটে নেয়া হয়।
&lt;a href='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f' target='_blank'&gt;&lt;img src='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=780&amp;amp;n=acd94d5f' border='0' alt='' /&gt;&lt;/a&gt;
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‌মাত্র তিনটে মাস। মধ্যবর্তী তিনটে মাসে দুই প্রতিবেশী দেশের প্রাপ্তির মানচিত্রে কম উপাদান সংযোজন হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফর করেছেন। ক্রিকেটবিশ্বে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের জমানা অস্তাচলে গিয়েছে। বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসেছেন জগমোহন ডালমিয়া। বিশ্বকাপ-উত্তর দু’দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কে উন্নতি ঘটেছে প্রভূত। শ্রীনির রক্তচক্ষু সত্ত্বেও বাংলাদেশের জুনিয়র টিম ভারতের বোর্ড প্রেসিডেন্টের শহরে ঘুরে গিয়েছে। আর যতই এক টেস্ট ও তিন ওয়ান ডে-র সংক্ষিপ্ত সফর হোক না কেন, বাংলাদেশ সফরে সিনিয়র টিমই শেষ পর্যন্ত পাঠিয়েছে ভারত।কিন্তু তিন মাসের বৃত্ত সম্পূর্ণ হতেই সব আবার পাল্টে গেল। মেলবোর্ন কোয়ার্টার ফাইনালের পূঞ্জীভূত ক্ষোভের মেঘ ঢেকে ফেলল মীরপুর আকাশকে। কাঁধের এক ধাক্কায় মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এ পারে সম্মানের সোনার সিংহাসন হারালেন। বাংলাদেশ বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলে গেলেন, ধোনি যা করেছেন সেটা এড়িয়ে গেলেই পারতেন। ভারত অধিনায়ক রাতে ঠিক করে ঘুমোতে পারলেন না। ম্যাচ হারের ময়নাতদন্ত করে উঠতে পারলেন না। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে এ দিন দুপুর পর্যন্ত তাকে দৌড়ে বেড়াতে হল ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ঘরে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে।যা সম্পূর্ণ প্রমাণ করতে পারলেন না ভারত অধিনায়ক। বাংলাদেশ পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের যদি পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা হয়ে থাকে, ধোনির হল পঁচাত্তর শতাংশ। ম্যাচ রেফারির সামনে ঘটনার সময় নিজের গতিবিধি, বোলারের মুভমেন্ট, রায়নার পজিশন সব পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা করেও পূর্ণ কলঙ্কমোচন সম্ভব হল না। এমএসডির ভাবমূর্তির পূর্ণগ্রাস আটকানো গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু একটা কথাও ঘুরেফিরে রমজানের পদ্মাপারে ভেসে বেড়াল।এমএসডিও তা হলে মেজাজ হারান! ক্যাপ্টেন কুলের বরফশীতল মস্তিষ্কেও তা হলে আগুন ধরে!নাটকের সূত্রপাত, বৃহস্পতিবার রাত দু’টোয়। মীরপুর স্টেডিয়াম ছেড়ে ততক্ষণে অভুক্ত অবস্থায় হোটেল ফিরে গিয়েছে টিম। আচমকাই রাত দু’টো নাগাদ ধোনিকে ডেকে পাঠান ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট। ভারত অধিনায়ক উপস্থিত হলে তাকে বলে দেয়া হয়, আম্পায়াররা তোমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট জমা করেছেন। মুস্তাফিজুরকে তুমি ধাক্কা মেরেছ ম্যাচে। যা লেভেল টু অপরাধ। এবং তিনটে রাস্তা ফেলে দেয়া হয় ধোনির সামনে।১) দোষ স্বীকার করে নেয়া। যা হলে ম্যাচ ফি-র পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা।২) দোষ স্বীকার করে শাস্তি কমানোর আবেদন করা।৩) অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করা। কিন্তু সেক্ষেত্রে দু’ম্যাচের নির্বাসন বা একশো শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেওয়ার যে কোনও একটা হবে। যা শুনে নাকি উত্তেজিত হয়ে পড়েন ধোনি। ঘনিষ্ঠদের কাছে বলতে থাকেন, তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে মোটেও এটা করেননি। দু’ভাবে ব্যাপারটা এড়ানো যেত। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে পড়তে পারতেন। কিন্তু তাতে রান আউট হতে হত। আর নইলে মুস্তাফিজুরকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য দিক দিয়ে দৌড়তে পারতেন। সেটা হলে নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে থাকা রায়নার সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারত। ধোনি নাকি আরও বলেন যে তাঁর কাঁধ, কনুইয়ের পজিশন দেখলেই বোঝা যাবে এটা ইচ্ছাকৃত নয়। তাই অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি লড়বেন। কারণ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করছেন এই মর্মে ফর্মে সই করে ম্যাচ রেফারির কাছে পাঠিয়েও দেয়া হয়।যার পর দু’টো ঘটনা নাকি সমান্তরাল ভাবে চলতে থাকে। ম্যাচ রেফারি এবং আম্পায়াররা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ নিয়ে রাতেই বসে পড়েন। বারবার চালিয়ে দেখা হয় ভারতীয় ইনিংসের পঁচিশ নম্বর ওভার। যেখানে মুস্তাফিজুরকে সজোরে ধাক্কা মেরে রান নিতে যাচ্ছেন ধোনি। ভারতীয় শিবিরে আবার বৈঠকের পর বৈঠক চলতে থাকে। সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ ব্রেকফাস্ট টেবলে বসে পড়েন চার জন। অধিনায়ক ধোনি। টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। সহ অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এবং টিমের প্রশাসনিক ম্যানেজার বিশ্বরূপ দে।শোনা গেল, ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবচেয়ে উত্তেজিত চরিত্রের নাম ছিল বিরাট কোহলি। যিনি নাকি বলতে থাকেন, দোষ যে করল সে শাস্তি পাচ্ছে না। যে করেনি, সে পাচ্ছে। ম্যাচ রেফারির ঘরে শুনানির জন্য ঢোকার আগে পরবর্তী প্ল্যান অব অ্যাকশনও ঠিক করে ফেলা হয়। পাইক্রফটের সামনে ঘটনার অ্যাকশন রিপ্লে ধোনি করে দেখাবেন। নিজের। বোলারের। রায়নার। শাস্ত্রী তুলবেন বোলারের পজিশনের ব্যাপারটা। আর টিম ম্যানেজার আইনি প্যাঁচে ফেলবেন পাইক্রফটকে। ছক বাঁধা পথে যা এর পর চলতে থাকে। ধোনি ঘটনার সময় নিজের কাঁধ, কনুই, মাথার পজিশন সব কিছুর পুনরাবৃত্তি করে বোঝাতে থাকেন কেন এটা ইচ্ছাকৃত নয়। শাস্ত্রী বলেন যে, বোলার কেন ডেঞ্জার জোনে ও ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে? ফলো থ্রু অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বলও তাঁর ধারেকাছে ছিল না। টিম ম্যানেজার বিশ্বরূপ যুক্তি দেন, কোনও গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে দু’ভাবে দেখা যেতে পারে। চালকের দোষে সেটা ঘটেছে। নইলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই গাড়ির সামনে চলে এসেছে। সব সময় তাই চালকের দোষেই হবে, এমন নয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, নানাবিধ যুক্তিতর্কের পর ম্যাচ রেফারি সুর নরম করে নাকি বলেন যে, ধোনি এটা ইচ্ছে করে করেননি বোঝা গেল। কিন্তু আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টেই আছে যে, ম্যাচ চলাকালীন ধাক্কাধাক্কি হলে জরিমানা অবধারিত। ধোনির তাই ম্যাচ ফি-র পঁচাত্তর শতাংশ কেটে নেওয়া হবে। শাস্ত্রীরা তখন বলেন যে, ধোনি দোষী হলে মুস্তাফিজুরও সম্পূর্ণ নির্দোষ নন। ভারত ঠিক করে ফেলে বাংলাদেশকে যদি না ডাকা হয়, তা হলে আইসিসির কাছে রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হবে। কিন্তু যুদ্ধে মহানাটকীয় মোড় এনে ম্যাচ রেফারি এ বার ডেকে পাঠান মুস্তাফিজুরকে। যাঁর আম্পায়ার্স রিপোর্টে নামই ছিল না! কিন্তু ভারতের শুনানির পরে মুস্তাফিজুরকে ডেকে তারও পঞ্চাশ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেয়া হয়।বাংলাদেশ যে সেটা খুব ভাল ভাবে নেয়নি বলাই বাহুল্য। শুনানি চুকেবুকে যাওয়ার পরে টিম হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলাদেশ বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলে দেন, এটা মাঠের ব্যাপার। তবে যা হল সেটা আমাদের পছন্দ নয়। আবহ যার পর আরও গুমোট হয়ে গেল। ভারত— তারাও গত রাতে ড্রেসিংরুমে শাস্ত্রীর মৃদু শাসনের বাইরে ময়নাতদন্ত নিয়ে এগোতে পারল না। অধিনায়কের সম্মান বাঁচাতেই গোটা দিন বেরিয়ে গেল। কিন্তু পুরো বাঁচল তো? বাংলাদেশ মিডিয়া বলল বাংলাদেশের জয়, মাশরফি মর্তুজার প্রকাশ্যে ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া, মুস্তাফিজুরের দোষ স্বীকার— এই তিনটে ফ্যাক্টর কাজ না করলে আরও বিপন্ন হতে পারত ধোনির ভাবমূর্তি। বলল, ধোনিকে আগে যুধিষ্ঠিরের সম্মানে দেখা হত। বৃহস্পতিবারের রাত থেকে যা আর সম্ভব নয়।এমএসডি নাকি প্রমাণ করে দিয়েছেন, তিনিও রক্তমাংসের মানুষ। তার সম্মান-রথের চাকাও প্রয়োজনে মাটি ছোঁয়!
 0  0  0  0
- See more at: http://www.jugantor.com/international/2015/06/20/281835#sthash.79MNIutz.dpuf
ভারতের চাপে মুস্তাফিজকে জরিমানা করলো ম্যাচ রেফারি
অনলাইন ডেস্ক, ২০ জুন:
প্রকাশ : ২০ জুন, ২০১৫
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে জরিমানা করা হয়েছে। তার ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ কেটে নেয়া হয়। আর ধোনিসহ টিম ইন্ডিয়ার চাপে বাংলাদেশের তরুণ পেসার মুস্তাফিজকে জরিমানা করেন ম্যাচ রেফারি পাইক্রফট। এমনই খবর প্রকাশ করেছে কলকাতার বিখ্যাত দৈনিক আনন্দবাজার। বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে শুনানিতে ধোনিদের চাপেই মুস্তাফিজের ম্যাচ ফির অর্ধেক কেটে নেয়া হয়।
&lt;a href='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f' target='_blank'&gt;&lt;img src='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=780&amp;amp;n=acd94d5f' border='0' alt='' /&gt;&lt;/a&gt;
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‌মাত্র তিনটে মাস। মধ্যবর্তী তিনটে মাসে দুই প্রতিবেশী দেশের প্রাপ্তির মানচিত্রে কম উপাদান সংযোজন হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফর করেছেন। ক্রিকেটবিশ্বে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের জমানা অস্তাচলে গিয়েছে। বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসেছেন জগমোহন ডালমিয়া। বিশ্বকাপ-উত্তর দু’দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কে উন্নতি ঘটেছে প্রভূত। শ্রীনির রক্তচক্ষু সত্ত্বেও বাংলাদেশের জুনিয়র টিম ভারতের বোর্ড প্রেসিডেন্টের শহরে ঘুরে গিয়েছে। আর যতই এক টেস্ট ও তিন ওয়ান ডে-র সংক্ষিপ্ত সফর হোক না কেন, বাংলাদেশ সফরে সিনিয়র টিমই শেষ পর্যন্ত পাঠিয়েছে ভারত।কিন্তু তিন মাসের বৃত্ত সম্পূর্ণ হতেই সব আবার পাল্টে গেল। মেলবোর্ন কোয়ার্টার ফাইনালের পূঞ্জীভূত ক্ষোভের মেঘ ঢেকে ফেলল মীরপুর আকাশকে। কাঁধের এক ধাক্কায় মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এ পারে সম্মানের সোনার সিংহাসন হারালেন। বাংলাদেশ বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলে গেলেন, ধোনি যা করেছেন সেটা এড়িয়ে গেলেই পারতেন। ভারত অধিনায়ক রাতে ঠিক করে ঘুমোতে পারলেন না। ম্যাচ হারের ময়নাতদন্ত করে উঠতে পারলেন না। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে এ দিন দুপুর পর্যন্ত তাকে দৌড়ে বেড়াতে হল ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ঘরে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে।যা সম্পূর্ণ প্রমাণ করতে পারলেন না ভারত অধিনায়ক। বাংলাদেশ পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের যদি পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা হয়ে থাকে, ধোনির হল পঁচাত্তর শতাংশ। ম্যাচ রেফারির সামনে ঘটনার সময় নিজের গতিবিধি, বোলারের মুভমেন্ট, রায়নার পজিশন সব পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা করেও পূর্ণ কলঙ্কমোচন সম্ভব হল না। এমএসডির ভাবমূর্তির পূর্ণগ্রাস আটকানো গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু একটা কথাও ঘুরেফিরে রমজানের পদ্মাপারে ভেসে বেড়াল।এমএসডিও তা হলে মেজাজ হারান! ক্যাপ্টেন কুলের বরফশীতল মস্তিষ্কেও তা হলে আগুন ধরে!নাটকের সূত্রপাত, বৃহস্পতিবার রাত দু’টোয়। মীরপুর স্টেডিয়াম ছেড়ে ততক্ষণে অভুক্ত অবস্থায় হোটেল ফিরে গিয়েছে টিম। আচমকাই রাত দু’টো নাগাদ ধোনিকে ডেকে পাঠান ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট। ভারত অধিনায়ক উপস্থিত হলে তাকে বলে দেয়া হয়, আম্পায়াররা তোমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট জমা করেছেন। মুস্তাফিজুরকে তুমি ধাক্কা মেরেছ ম্যাচে। যা লেভেল টু অপরাধ। এবং তিনটে রাস্তা ফেলে দেয়া হয় ধোনির সামনে।১) দোষ স্বীকার করে নেয়া। যা হলে ম্যাচ ফি-র পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা।২) দোষ স্বীকার করে শাস্তি কমানোর আবেদন করা।৩) অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করা। কিন্তু সেক্ষেত্রে দু’ম্যাচের নির্বাসন বা একশো শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেওয়ার যে কোনও একটা হবে। যা শুনে নাকি উত্তেজিত হয়ে পড়েন ধোনি। ঘনিষ্ঠদের কাছে বলতে থাকেন, তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে মোটেও এটা করেননি। দু’ভাবে ব্যাপারটা এড়ানো যেত। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে পড়তে পারতেন। কিন্তু তাতে রান আউট হতে হত। আর নইলে মুস্তাফিজুরকে বাঁচাতে গিয়ে অন্য দিক দিয়ে দৌড়তে পারতেন। সেটা হলে নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে থাকা রায়নার সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারত। ধোনি নাকি আরও বলেন যে তাঁর কাঁধ, কনুইয়ের পজিশন দেখলেই বোঝা যাবে এটা ইচ্ছাকৃত নয়। তাই অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি লড়বেন। কারণ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করছেন এই মর্মে ফর্মে সই করে ম্যাচ রেফারির কাছে পাঠিয়েও দেয়া হয়।যার পর দু’টো ঘটনা নাকি সমান্তরাল ভাবে চলতে থাকে। ম্যাচ রেফারি এবং আম্পায়াররা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ নিয়ে রাতেই বসে পড়েন। বারবার চালিয়ে দেখা হয় ভারতীয় ইনিংসের পঁচিশ নম্বর ওভার। যেখানে মুস্তাফিজুরকে সজোরে ধাক্কা মেরে রান নিতে যাচ্ছেন ধোনি। ভারতীয় শিবিরে আবার বৈঠকের পর বৈঠক চলতে থাকে। সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ ব্রেকফাস্ট টেবলে বসে পড়েন চার জন। অধিনায়ক ধোনি। টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। সহ অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এবং টিমের প্রশাসনিক ম্যানেজার বিশ্বরূপ দে।শোনা গেল, ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবচেয়ে উত্তেজিত চরিত্রের নাম ছিল বিরাট কোহলি। যিনি নাকি বলতে থাকেন, দোষ যে করল সে শাস্তি পাচ্ছে না। যে করেনি, সে পাচ্ছে। ম্যাচ রেফারির ঘরে শুনানির জন্য ঢোকার আগে পরবর্তী প্ল্যান অব অ্যাকশনও ঠিক করে ফেলা হয়। পাইক্রফটের সামনে ঘটনার অ্যাকশন রিপ্লে ধোনি করে দেখাবেন। নিজের। বোলারের। রায়নার। শাস্ত্রী তুলবেন বোলারের পজিশনের ব্যাপারটা। আর টিম ম্যানেজার আইনি প্যাঁচে ফেলবেন পাইক্রফটকে। ছক বাঁধা পথে যা এর পর চলতে থাকে। ধোনি ঘটনার সময় নিজের কাঁধ, কনুই, মাথার পজিশন সব কিছুর পুনরাবৃত্তি করে বোঝাতে থাকেন কেন এটা ইচ্ছাকৃত নয়। শাস্ত্রী বলেন যে, বোলার কেন ডেঞ্জার জোনে ও ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে? ফলো থ্রু অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। বলও তাঁর ধারেকাছে ছিল না। টিম ম্যানেজার বিশ্বরূপ যুক্তি দেন, কোনও গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে দু’ভাবে দেখা যেতে পারে। চালকের দোষে সেটা ঘটেছে। নইলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই গাড়ির সামনে চলে এসেছে। সব সময় তাই চালকের দোষেই হবে, এমন নয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, নানাবিধ যুক্তিতর্কের পর ম্যাচ রেফারি সুর নরম করে নাকি বলেন যে, ধোনি এটা ইচ্ছে করে করেননি বোঝা গেল। কিন্তু আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টেই আছে যে, ম্যাচ চলাকালীন ধাক্কাধাক্কি হলে জরিমানা অবধারিত। ধোনির তাই ম্যাচ ফি-র পঁচাত্তর শতাংশ কেটে নেওয়া হবে। শাস্ত্রীরা তখন বলেন যে, ধোনি দোষী হলে মুস্তাফিজুরও সম্পূর্ণ নির্দোষ নন। ভারত ঠিক করে ফেলে বাংলাদেশকে যদি না ডাকা হয়, তা হলে আইসিসির কাছে রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হবে। কিন্তু যুদ্ধে মহানাটকীয় মোড় এনে ম্যাচ রেফারি এ বার ডেকে পাঠান মুস্তাফিজুরকে। যাঁর আম্পায়ার্স রিপোর্টে নামই ছিল না! কিন্তু ভারতের শুনানির পরে মুস্তাফিজুরকে ডেকে তারও পঞ্চাশ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেয়া হয়।বাংলাদেশ যে সেটা খুব ভাল ভাবে নেয়নি বলাই বাহুল্য। শুনানি চুকেবুকে যাওয়ার পরে টিম হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলাদেশ বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলে দেন, এটা মাঠের ব্যাপার। তবে যা হল সেটা আমাদের পছন্দ নয়। আবহ যার পর আরও গুমোট হয়ে গেল। ভারত— তারাও গত রাতে ড্রেসিংরুমে শাস্ত্রীর মৃদু শাসনের বাইরে ময়নাতদন্ত নিয়ে এগোতে পারল না। অধিনায়কের সম্মান বাঁচাতেই গোটা দিন বেরিয়ে গেল। কিন্তু পুরো বাঁচল তো? বাংলাদেশ মিডিয়া বলল বাংলাদেশের জয়, মাশরফি মর্তুজার প্রকাশ্যে ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া, মুস্তাফিজুরের দোষ স্বীকার— এই তিনটে ফ্যাক্টর কাজ না করলে আরও বিপন্ন হতে পারত ধোনির ভাবমূর্তি। বলল, ধোনিকে আগে যুধিষ্ঠিরের সম্মানে দেখা হত। বৃহস্পতিবারের রাত থেকে যা আর সম্ভব নয়।এমএসডি নাকি প্রমাণ করে দিয়েছেন, তিনিও রক্তমাংসের মানুষ। তার সম্মান-রথের চাকাও প্রয়োজনে মাটি ছোঁয়!
 0  0  0  0
- See more at: http://www.jugantor.com/international/2015/06/20/281835#sthash.79MNIutz.dpuf

No comments:

Post a Comment